আরজি বা জবাবে নতুন কোন বক্তব্য সংজোযন বা কোন বক্তব্য বিয়োজন বা এমন তথ্য যা পূর্বে কোন পক্ষের গোচরীভূত ছিলনা তা সংজোযন করে আরজি বা জবারের যে পরিমারজন, পরিবর্তন করা হয় তাকে আরজি বা জবাব সংশোধন বলে , মামলার যে পর্যায় পর্যন্ত আরজি সংশোধনের আবেদন করা যাবে , মোকদ্দমার কোন পর্যায় পর্যন্ত আরজি সংশোধনের আবেদন করা যায় এবং আদালত তা মঞ্জুর করবে তা দেওয়ানী কার্যবিধির ৬ আদেশের ১৭ বিধি এবং বিচারিক নজির দ্বারা নির্ধারণ করতে হবে। মোকদ্দমার কোন পর্যায় পর্যন্ত আরজি সংশোধনের আবেদন করা যাবে, সেই সংক্রান্ত বিধান ২০১২ সালে দেওয়ানী কার্যবিধির ৬ নং আদেশের ১৭ বিধির সংশোধনের কারণে কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে।
দেওয়ানী কার্যবিধির আদেশ ৬ এর ১৭ নং বিধিতে প্লীডিংস সংশোধন সম্পর্কে বলা হয়েছে। মোকদ্দমার যে কোন পর্যায়ে আদালত যে কোন পক্ষকে ন্যায়সঙ্গত পদ্ধতিতে ও শর্তে তার আরজি বা জবাবে পরিবর্তন বা সংশোধনকরার অনুমতি দিতে পারে এবং উভয়পক্ষের মধ্যে বিরোধের প্রকৃত প্রশ্ন নির্ধারণের উদ্দেশ্যেই এইরুপ যাবতীয় প্রয়োজনীয় সংশোধন করা যাবে। ও প্রীডিংস সংশোধনের আবেদন মোকদ্দমার যে কোন কার্যধারায় মঞ্জুর করা যেতেপারে শর্ত হলোএটা অন্য পক্ষের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হবে না।
সুতরাংমোকদ্দমার যে কোন পর্যায়ে আরজি সংশোধনের আবেদন করা যায়। কিন্তু দেওয়ানীকার্যবিধি (সংশোধনী) ২০১২ প্লীডিংস ( আরজি বা লিখিত জবাব) সংশোধনের আবেদন মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে আদালতের ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রিত করেছে। ২০১২ সালেদেওয়ানী কার্যবিধির সংশোধনীর মাধ্যমে বলা হয়েছে।
বিচার শুরু হওয়ার পর প্লীডিংস সংশোধন করার কোন আবেদন মঞ্জুর করা যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, আবেদনকারী যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করার পরও উক্ত আবেদনকারী মোকদ্দমার বিচার শুরু হবার আগে সংশোধন করার আবেদন করতে পারেনি।
অর্থাৎ আরজি সংশোধনের আবেদন মোকদ্দমার যে কোন পর্যায়ে করা যায় কিন্তু বিচার শুরু হওয়ার পর আরজি সংশোধনের আবেদন করা গেলেও তা মঞ্জুরের বিষয়টি আদালতের সন্তুষ্টির উপর নির্ভর করে। প্রাথমিক নিয়ম হলো বিচার শুরু হওয়ার পর প্লীডিংস সংশোধন করার কোন আবেদন আদালত মঞ্জুর করবে না। কিন্তু আদালত যদি সন্তুষ্ট হয় যে আবেদনকারী যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করার পরও মোকদ্দমার বিচার শুরু হবার আগে সংশোধন করার আবেদন করতে পারেনি, তাহলে আদালত আরজি সংশোধনের আবেদন মঞ্জুর করতে পারে। ২০১২ সালে ৬ আদেশের ১৭ বিধির ৩৭ সংশোধনীর মাধ্যমে আদালতকে বিচার শুরুর পর আরজি সংশোধনের আবেদন মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে ব্যাপক স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কারণ এটা আদালতের সন্তষ্টির ব্যাপার।
প্লীডিংস সংশোধনের আবেদন মোকাদ্দমার যে কোন কার্যধারায় মঞ্জুর করা যেতে পারে শর্ত হলো এটা অন্য পক্ষের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হবে না বাংলাদেশের সুগ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগ আব্দুর রহমান বনাম নারায়ণগঞ্জ মিউনিসিপালিটি
মামলায় এই মত দিয়েছে যে, আরজি সংশোধনের আবেদন বিচার শুরুর আগে, বিচার চলাকালে, বিচারের পর বা আপীলে বা রিভিশনে বা আপীল বিভাগে এমনকি কোন কার্যধারা বাস্তবায়নের সময় করা যায়।
হানিফ আলী বনাম হাজরা মামলায় আদালত সিদ্ধান্ত দেয় যে, বণ্টনের মোকদ্দমায় চূড়ান্ত ডিক্রী না হওয়া পর্যন্ত মোকদ্দমাটি বিচারাধীন থাকে বলে ধরে নেওয়া হয় এবং সে কারণে প্রাথমিক ডিক্রী হয়ে যাওয়ার পরও বিচারকারী আদালত উক্ত মামলার আরজি সংশোধনের আবেদন গ্রহণ করতে পারে।
সুতরাং বিচারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বলা যায়, আপীল চলাকালীন সময়েও প্লীডিংস ( আরজি বা লিখিত জবাব) সংশোধনের আবেদন করা যায়। কিন্তু দেওয়ানী কার্যবিধির ২০১২ সালের সংশোধন অনুযায়ী বিচার শুরু হওয়ার পর যেমন আপীলের সময় আরজি সংশোধন করার কোন আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করবে না। যদি না আদালত কে সন্তুষ্ট করা যায় যে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করার পরও আবেদনকারী মোকদ্দমার বিচার শুরু হবার আগে সংশোধনের করার আবেদন করতে পারেনি।
সুতরাং আপীলে কোন আরজি সংশোধনের আবেদন করা হলে আদালতকে সন্তুষ্টকরতে হবে যে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করার পরও মোকদ্দমার বিচার শুরু হওয়ার আগে বাদী সংশোধনের আবেদন করতে পারেনি।
ধন্যবাদান্তে,
জুরিস্ট কমিউনিকেশন ল ফার্ম
মোবাইলঃ 01886012863
ইমেইলঃ juristcommunication@gmail.com