ট্রাইব্যুনাল হলো সংবিধান বা অন্য কোনো আইন দ্বারা গঠিত এক ধরনের বিশেষ বিচারিক প্রতিষ্ঠান, যেটি নির্দিষ্ট কিছু বিষয় নিষ্পত্তির কাজ করে থাকে।
প্রচলিত আদালতের এখতিয়ার বেশ বিস্তৃত হলেও ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার খুব সুনির্দিষ্ট। ট্রাইব্যুনালকে তাই ‘কুয়াজাই জুডিশিয়াল’ বা ‘আধা-বিচারিক ব্যবস্থা’ হিসেবেও অভিহিত করা হয়। ফ্রান্সে প্রথম এ ধরনের বিচারিক প্রতিষ্ঠানের উদ্ভব হয়।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে ন্যায়বিচার এবং অপরাধ দমনে সরকার ট্রাইব্যুনাল ব্যবস্থার প্রবর্তন করে।
আদালত ও ট্রাইব্যুনালের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল হলো আধা-বিচারিক প্রতিষ্ঠান, অন্যদিকে আদালত হলো পূর্ণাঙ্গ বিচারিক প্রতিষ্ঠান।
কোনো বিশেষ আইনের অধীনে ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়।
যেমন, বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৫-এর অধীনে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল এবং প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৮০-এর আওতায় প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছে। একইভাবে, আলোচিত ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল’ গঠিত হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩-এর অধীনে।
ট্রাইব্যুনালগুলো স্বাধীনভাবেই কাজ করলেও উচ্চ আদালতের পরিদর্শন এখতিয়ারের অধীনে থাকে। বাংলাদেশের ট্রাইব্যুনালগুলো সুপ্রিমকোর্টের অধীন। ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবার জন্য পৃথক আপিল ট্রাইব্যুনাল থাকতে পারে। সেটি না থাকলে সুপ্রিমকোর্টেই আপিল আবেদন করতে হয়।
ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে সরকার মূলত বর্তমান কিংবা অবসরপ্রাপ্ত বিচারক অথবা কোনো আইনজীবীকে নিয়োগ করতে পারে।
ট্রাইব্যুনালের কার্যবিধি প্রচলিত আদালত থেকে ভিন্ন হয়ে থাকে। প্রচলিত দেওয়ানি কিংবা ফৌজদারি কার্যবিধি এবং তামাদি আইন ট্রাইব্যুনালের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে আবার নাও হতে পারে।
আদালতের আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের নিয়মগুলি আদালতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য এবং ট্রাইব্যুনালে এই নিয়মগুলির প্রতি সুস্পষ্ট পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়।
আদালতে, লোকেরা খুব কমই কথা বলার সুযোগ পায় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে কথোপকথন আইনজীবি দ্বারা সম্পন্ন হয়। অন্যদিকে, ট্রাইব্যুনাল জনগণকে দাঁড়িয়ে দাঁড়ানোর জন্য উৎসাহিত করে এবং বিতর্ক নিষ্পত্তিতে আইনজীবীদের সামান্য ভূমিকা পালন করে থাকে।
আদালতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিচারের ক্ষমতা আছে, তবে ট্রাইব্যুনাল কোন বিশেষ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে থাকে।
আদালতে মামলাটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল, কারণ এটর্নিদের ফি থেকে পৃথক করে বিভিন্ন ধরনের ফি দিতে হয়। অন্যদিকে, ট্রাইব্যুনালগুলি সমাধান জন্য দ্রুত এবং দ্রুত প্রমাণিত।
একটি আদালতের মামলা বিচারক বা ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা পরিচালিত হয়। অন্যদিকে চেয়ারম্যান এবং অন্যান্য সদস্যদের সংশ্লিষ্ট প্যানেল রয়েছে যারা প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ।
ট্রাইব্যুনালের আদালতের চেয়ে কম ক্ষমতা আছে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ট্রাইব্যুনাল আদালতের জন্য সাধারণ ব্যক্তির কারাদণ্ডের আদেশ দিতে পারে না।