একটি দেওয়ানী মামলা পরিচালনা ও বিচারকার্য সম্পন্ন করতে গেলে বেশ কতগুলো ধাপ বা পর্যায় অতিক্রম করে তারপর রায় পর্যন্ত পৌছতে হয়। এই ধাপসমূহ বা পর্যায়গুলো সম্পর্কে জানা একজন আইনজীবীর জন্য যেমন প্রয়োজন তেমন একজন বিচার প্রত্যাশীর ও জানা খুবই প্রয়োজন। কেননা একজন বিচার প্রত্যাশী যখন জানবে বা বুঝবে যে তাকে ন্যায় বিচার পেতে হলে এই ধাপগুলো অতিক্রম করতে হবে তখন সে আইনজীবী ও কোর্টকে বিভিন্ন ভাবেই সহযোগীতা করতে পারবে। তো চলুন জেনে নেই কি সেই ধাপগুলো।
১. সেরেস্তাদারের নিকট মামলা দায়েরঃ
প্রথম কাজ হচ্ছে আইনজীবী তার গ্রাহকের কাছ থেকে সমস্ত ঘটনা শুনবে এবং সেই ঘটনার আলোকে মামলার ড্রাফটিং তৈরী করবে। এর পর সেই ড্রাফটিং ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও কোর্ট ফি যথযথ ভাবে প্রিন্ট করে। সব ডকুমেন্টস একসাথে বাধাই করে সেরেস্তাদারের নিকট সবকিছু জমা প্রদান করবেন।
২. সেরেস্তাদার কতৃর্ক মামলা গ্রহন এবং নম্বর প্রদানঃ
উপরোক্ত সকল কাগজপত্র জমা প্রদানের পর সেরেস্তাদার মামলার নথিতে কোর্ট ফি যথাযথ ভাবে দেওয়া হয়েছে কিনা, সঠিক কোর্ট এ মামলা দায়ের হয়েছে কিনা, মামলার ধারা সঠিক কিনা ইত্যাদি বিষয় দেখে মামলাটি গ্রহন করবেন। এবং একটি অস্থায়ী ক্রমিক নম্বর প্রদান করবেন। মনে রাখতে হবে এই ক্রমিক নম্বর কিন্তু মামলা নম্বর নয়।
৩. সেরেস্তাদার থেকে সংশ্লিস্ঠ আদালতে মামলা প্রেরন এবং সমন ইস্যুঃ
সেরেস্তাদার অস্থায়ী মামলা নম্বর সহ সেই নথি প্রেরন করবেন যথাযথ আদালতে এরপর সেই আদালত থেকেই প্রকৃত স্থায়ী মামলা নম্বর এবং কোর্ট এর নাম ও মামলার পরবর্তী তারিখ জানা যাবে। উল্লেখ্য সেরেস্তাদার থেকে প্রকৃত কোর্টে মামলা আসতে প্রায় এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। সংশ্লিষ্ঠ বিচারক মামলার নথী দেখে মামলাটি আমলে নিলেই কেবল মামলার নম্বর পড়বে। এবং আদালত বিবাদীদের প্রতি সমন ইস্যু করবেন। সমন অর্থ হলো নোটিশ প্রেরন। আদালত বিবাদীদেরকে সমন প্রদানের মাধ্যমে কোর্টে এ হাজির হতে নিদের্শ দিবেন। এবং নিদির্স্ট তারিখে বিবাদীদের স্বপক্ষে জবাব দেওয়ার জন্য বলবেন।
এই সমন প্রদানের পরই মামলাটি বিবাদীর উপস্থিতি কিংবা অনুপস্থিতির উপর ভিত্তি করে মামলার স্টেজ বা ধাপগুলো দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যাবে।
আগামী পর্বে আমরা বিবাদীর উপস্থিতি কিংবা অনুপস্থিতির উপর ভিত্তি করে দেওয়ানী মামলা পরিচালনার যে ধাপগুলো রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করবো।