দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্য পরিচালনা হয় দ্রুত । চাঞ্চল্যকর হত্যা, ধর্ষণ, আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য ও মাদকদ্রব্য-সংক্রান্ত অপরাধের মামলার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০০২ সালে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন পাস হয়। সে বছরই ঢাকার প্রথম দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল কাজ শুরু করে।
ধারা ৪(১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সমগ্র দেশের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করিবে৷
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন একাধিক দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করা হইলে, ট্রাইব্যুনাল গঠনকারী প্রজ্ঞাপনে সরকার প্রতিটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ারভুক্ত এলাকা নির্দিষ্ট করিয়া দিবে৷
(৩) প্রত্যেক দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে একজন করিয়া বিচারক থাকিবেন এবং উক্ত বিচারক বিচার কর্ম বিভাগের জেলা জজ পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের মধ্য হইতে নিযুক্ত হইবেন৷
(৪) সরকার যে স্থান বা স্থানসমূহ নির্ধারণ করিবে সেই স্থানে বা স্থানসমূহের যে কোন স্থানে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল বসিতে পারিবে এবং উহার কার্যক্রম পরিচালনা করিতে পারিবে৷
ধারা – ৫ – সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করিবে শুধু সেই মামলাই এই ট্রাইব্যুনাল বিচার করিবে৷
ধারা -৬-সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, জনস্বার্থে, হত্যা, ধর্ষণ, আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য এবং মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত অপরাধের বিচারাধীন কোন মামলা উহার যে কোন পর্যায়ে ক্ষেত্রমত, দায়রা আদালত বা বিশেষ আদালত বা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত হইতে বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করিতে পারিবে৷
ধারা ৭(১) দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল একটি দায়রা আদালত বলিয়া গণ্য হইবে৷
(২) দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল তত্কর্তৃক বিচারকৃত অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট আইন দ্বারা নির্ধারিত যে কোন দণ্ড আরোপ করিতে পারিবে৷
ধারা ৮(১) যে পর্যায়ে কোন একটি মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হইবে সেই পর্যায় হইতে উক্ত মামলার বিচারকার্য পরিচালিত হইবে৷
সাক্ষ্য-সাবুদ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের সাক্ষ্য-সাবুদ বলিয়া বিবেচিত হইবে এবং সুবিচারের জন্য প্রয়োজন না হইলে এই সাক্ষ্য-সাবুদ পুনরায় গ্রহণ করার প্রয়োজন হইবে না৷
ধারা ৯(১) দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত মামলার বিচারের ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির Chapter XX, যতদূর এই আইনের সহিত সাংঘর্ষিক না হয় ততদূর, প্রযোজ্য হইবে৷
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোন মামলা সম্পর্কিত অপরাধটির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সাত বত্সরের অধিক কারাদণ্ড না হইলে, মামলাটির বিচার সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে নিষ্পন্ন হইবে এবং সেই ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির Chapter XXII যতদূর সম্ভব অনুসরণ করা হইবে৷
(৩) দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত কোন মামলায় অভিযুক্ত কিংবা দণ্ডপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির জামিনে মুক্তির আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে মামলাটি যে আদালত হইতে স্থানান্তরিত করা হইয়াছিল, সেই আদালতে এই আবেদন দাখিল করা হইলে যে বিধান প্রযোজ্য হইত সেই বিধান প্রযোজ্য হইবে৷
ধারা ১০(১) দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত কোন মামলা স্থানান্তরের তারিখ হইতে নব্বই কার্য দিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করিতে হইবে৷
(২) কোন অনিবার্য কারণে উক্ত মেয়াদের মধ্যে কোন মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব না হইলে, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া অতিরিক্ত ত্রিশ কার্য দিবসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করিতে পারিবে এবং তত্সম্পর্কে সুপ্রীম কোর্টকে লিখিতভাবে অবহিত করিবে, যাহার একটি অনুলিপি সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে৷
(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত বর্ধিত সময়ের মধ্যেও যদি যুক্তিসঙ্গত কোন কারণে কোন মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব না হয়, তাহা হইলে ট্রাইব্যুনাল উহার কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য সর্বশেষ আরো পনের কার্য দিবস সময় নিতে পারিবে এবং এইরূপ সময় বর্ধিতকরণ সম্পর্কে সুপ্রীম কোর্টকে লিখিতভাবে অবহিত করিবে, যাহার একটি অনুলিপি সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে৷
(৪) কোন ক্ষেত্রে উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত সর্বশেষ বর্ধিত মেয়াদের মধ্যেও যদি কোন মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব না হয়, তাহা হইলে মামলাটি যে আদালত হইতে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত করা হইয়াছিল সেই আদালতে উক্ত ট্রাইব্যুনাল কারণ লিপিবদ্ধ করতঃ উহা ফেরত পাঠাইবে এবং উক্তরূপে ফেরত পাঠানো সম্পর্কে কারণ লিপিবদ্ধ করতঃ সুপ্রীম কোর্টকে লিখিতভাবে অবহিত করিবে, যাহার একটি অনুলিপি সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে৷
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন কোন মামলা কোন আদালতে ফেরত আসিলে সেই মামলাটির বিচারকার্য উক্ত আদালতে বিচারাধীন অন্যান্য সকল মামলার উপর প্রাধান্য পাইবে এবং যে পর্যায়ে মামলাটি ফেরত আসিয়াছে সেই পর্যায় হইতে উহার বিচারকার্য পরিচালনা করা হইবে, যেন উক্ত আদালতে মামলাটি ঐ পর্যায়ে বিচারাধীন ছিল এবং ইহা কখনও স্থানান্তরিত হয় নাই:
তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত আদালতে উক্ত সময়ে যদি অন্য কোন মামলার শুনানী চলিতে থাকে, তবে ঐ মামলার শুনানী শেষ হইবার পর ফেরতপ্রাপ্ত মামলাটির শুনানী শুরু করিতে হইবে এবং ইহার শুনানী শুরু করিবার পর ইহা শেষ না হওয়া পর্যন্ত একটানা চলিতে থাকিবে এবং অনিবার্য কোন কারণ ব্যতীত, যাহা লিপিবদ্ধ করিতে হইবে, ইহার শুনানী মুলতবী করা যাইবে না৷