বাণিজ্যিক কারনে এবং কল-কারখানা হতে উদ্ভত বিরোধের নিস্পত্তি যে আদালতে হয়ে থাখে তাকে শ্রম আদালত বলা হয়ে থাকে।
ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প শ্রমিকদের নিয়োগ সম্পর্কিত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য শ্রম আদালত গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি শ্রম আদালত একজন চেয়ারম্যান ও দুজন সদস্য নিয়ে গঠিত। জেলা জজ বা অতিরিক্ত জেলা জজদের মধ্য থেকে চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়। সদস্যদের একজনকে মালিকদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে এবং অপরজনকে শ্রমিকদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে নিযুক্ত করা হয়।
শ্রম আদালত শিল্পবিরোধ, মালিক-শ্রমিক সমঝোতার বাস্তবায়ন বা লঙ্ঘন, মালিক ও শ্রমিকদের পরস্পরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ এবং ছাঁটাই, লে-অফ, নিয়োগ বাতিল, চাকরি থেকে বরখাস্ত, চাকরিতে থাকাকালে পঙ্গুত্ব বরণ হেতু ক্ষতিপূরণ ও বেতন পরিশোধ না করা সংক্রান্ত শ্রমিকদের অভিযোগ নিষ্পত্তি করে রায় দিয়ে থাকে এবং শ্রম সম্পর্কিত অন্যায্য কার্যকলাপ, সমঝোতা ভেঙে যাওয়া বা তা বাস্তবায়ন না করা, বেআইনি ধর্মঘট বা লক আউট এবং শ্রম আদালতের আদেশ না মানা সম্পর্কিত অপরাধসমূহের বিচারও করে থাকে। শ্রম আদালতের রোয়েদাদে সংক্ষুব্ধ যেকোন পক্ষ শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করতে পারেন। হাইকোর্ট বিভাগের চাকরিরত বা অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের মধ্য থেকে সরকার কর্তৃক নিযুক্ত একজন মাত্র সদস্য নিয়ে এই ট্রাইব্যুনাল গঠিত। শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালকে চাকরিচ্যুত শ্রমিক বা শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহালের রোয়েদাদের বিরুদ্ধে আপিলের নিষ্পত্তি আপিল পেশ করার ১৮০ দিনের মধ্যে করতে হয। তবে শ্রম আপিল আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনো আপীল করা যায় না।
শ্রম আপিল আদালতের সিদ্ধান্তে কোনো পক্ষ সংক্ষুদ্ধ হয়েছে মনে করলে তিনি ঐ মামলার আইনগত বৈধতা বা যথার্থতা সম্পর্কে সন্তুষ্ট হবার উদ্দেশ্যে মামলার নথিপত্র পরীক্ষা করে দেখার জন্য রীট অব সার্টিওয়ারি ইস্যু করার ব্যাপারে হাইকোর্ট ডিভিশনে দরখাস্ত পেশ করতে পারেন। শ্রমিকের ক্ষতিপূরণের কমিশনার হিসেবে শ্রম আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট ডিভিশনে আপীল করা যেতে পারে।
শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনাল– শ্রম আদালত কর্তৃক প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে আপীল দায়ের করা হয়ে থাকে।