1. admin@adalatnews.com : Admin :
  2. juristcommunication@gmail.com : muradjc :
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা - আদালত নিউজ
বুধবার, ০৭ জুন ২০২৩, ০৮:২০ পূর্বাহ্ন

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৬০৬ Time View
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করার নিয়ম সর্ম্পকে আপনি কতটা জানেন , বর্তমানে বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে। বেড়েছে যৌন হয়রানি, ধর্ষণসহ, অপহরণের ঘটনা। এগুলোর মধ্যে কিছু ঘটনা প্রকাশিত হলেও বেশির ভাগ ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায় লোকলজ্জার কারণে । এসব ঘটনায় নির্যাতিতদের আইনি সুবিধা দেওয়ার জন্য ২০০০ সালে সরকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন তৈরি করে। সরকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০১৩ সালে সংশোধন করে আরো কঠোর করা হয় । নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে প্রতিকার চাইলে বিচারপ্রার্থীদের জন্য কোথায় যেতে হবে, কার কাছে যেতে হবে বিচারপ্রার্থীদের সম্পর্কে কিছু জানে না। তাই কীভাবে আইনি সুবিধা পাবেন তা নিয়ে আজকের আলোচনা।

যে সবল অপরাধ নারী ও শিশু নির্যাতনের অন্তর্ভুক্ত

বাংলাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধিত ২০১৩ অনুযায়ী যেসব অপরাধ এ আইনের অন্তর্ভুক্ত তা হলো- দহনকারী বা ক্ষয়কারী, নারী পাচার, শিশু পাচার, নারী ও শিশু অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, ধর্ষণ, ধর্ষণজনিত কারণে মৃত্যু, নারীর আত্মহত্যায় প্ররোচনা, যৌন নিপীড়ন, যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানো, ভিক্ষাবৃত্তি ইত্যাদির উদ্দেশ্যে শিশুকে অঙ্গহানি, ধর্ষণের ফলে জন্মলাভ কারী শিশু সংক্রান্ত বিধান।

থানায় মামলা দায়ের

উপরে উল্লেখিত যে কোনো ঘটনার শিকার হলে আপনার পার্শ্ববর্তী থানায় গিয়ে বিষয়টি জানান। বিষয়টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এজাহার হিসেবে গহণ করে তিনি ঘটনাটি প্রাথমিক তথ্য বিবরণী ফরমে লিপিবদ্ধ করবেন । পরে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট এখতিয়ারসম্পন্ন হাকিম আদালতে প্রেরণ করবেন। এখতিয়ারাধীন হাকিম তা গ্রহণ করলে ওই মামলার প্রতিবেদন প্রদানের জন্য একটি তারিখ ধার্য করবেন। এবং পরবর্তী সময়ে মামলাটির পুলিশ প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে উপযুক্ত আদালত তথা নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠাবেন। এরপর নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল মামলাটি বিচারের জন্য সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করলে সেই তারিখে মামলাটির বাদী ও অভিযুক্তকে আদালতের সামনে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দিতে হবে এবং মামলার পরবর্তী কার্যক্রম চলতে থাকবে।

কোন আদালতে মামলা করবেন

কোনো কারণে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) যদি অভিযোগটি গ্রহণে অসম্মতি প্রকাশ করেন, তাহলে থানায় কারণ উল্লেখ করে মামলাটি গ্রহণ করা হয়নি মর্মে আবেদনপত্র সঙ্গে নিয়ে সরাসরি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করা যাবে। এ ক্ষেত্রে মামলাকারী ব্যক্তি প্রথমে নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমনে নিযুক্ত নারী ও শিশু পাবলিক প্রসিকিউটরের (পিপি নারী ও শিশু) কাছে প্রত্যয়ন ও সত্যায়িত করে মামলা করতে হবে। এ ছাড়া আবেদনটি বিচারকের সামনে হাজির করার সময় অভিযুক্তকে আদালতে উপস্থিত হয়ে জবানবন্দী দিয়ে মামলা করতে হবে। আদালত অভিযুক্তের জবানবন্দি শোনার পর মামলাটি আমলে নিয়ে পরবর্তী কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন।

সরকারি আইনজীবী

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় বাদী নিজস্ব কোনো আইনজীবী নিয়োগের প্রয়োজন নেই। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯২ ধারা অনুযায়ী তিনি সরকারের পক্ষ থেকে আইনজীবী পাবেন। তিনি মামলার সব তত্ত্বাবধান করবেন। যদি বাদী নিজে আইনজীবী নিয়োগ দিতে চান তাহলে সেই আইনজীবী সরকারি আইনজীবীর অধীনে কাজ করবেন। সরকারের পক্ষ থেকে নিয়োগ দেওয়া আইনজীবীকে কোনো খরচ দিতে হবে না।

বিচার প্রক্রিয়া

দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল রয়েছে, অথবা এখতিয়ার সম্পন্ন বিচারক দ্বারা ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম চলমান আছে। এই আইনে ট্রাইব্যুনাল রুদ্ধদ্বার কক্ষে বিচার পরিচালনাও করতে পারেন। কোনো ব্যক্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বা স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত মনে করলে বিচারক শুধু মামলার দুই পক্ষকে এবং তাদের নিয়োজিত আইনজীবীদের নিয়ে বিচার পরিচালনা করতে পারেন। তা না করলে বিধান মোতাবেক বিচার পরিচালিত হবে।

বিচারের মেয়াদ

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধিত আইন ২০১৩ অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল ১৮০ দিনের মধ্যে বিচারকাজ শেষ করবেন। ট্রাইব্যুনাল যদি ১৮০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তার কারণসংবলিত একটি প্রতিবেদন ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করবেন। যার একটি অনুলিপি সরকারকেও দিতে হবে। তা ছাড়া এ ক্ষেত্রে পাবলিক প্রসিকিউটর ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা ৩০ দিনের মধ্যে সরকারের কাছে কারণ উল্লখপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করবেন। এ রকম দাখিলকৃত প্রতিবেদনগুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিবেচিত হওয়ার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার জন্য দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই আইন অনুযায়ী পুলিশ যদি অভিযোগ গ্রহণ না করে সে ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল সরাসরি বিচারের জন্য অভিযোগ নিতে পারেন। এই বিধানটি যদি বাস্তবে প্রয়োগ করা হয়, তবে জনগণের অভিযোগ করা অনেক সহজ হবে।

নিরাপত্তামূলক হেফাজত

এই আইনের অধীন বিচার চলাকালে যদি ট্রাইব্যুনাল মনে করেন কোনো নারী বা শিশুকে নিরাপত্তামূলক হেফাজতে রাখা প্রয়োজন, তাহলে ট্রাইব্যুনাল ওই নারী বা শিশুকে কারাগারের বাইরেও সরকার কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে বা যথাযথ অন্য কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিতে পারেন। বিচার চলাকালে যদি অপরাধী মহল নির্যাতিত নারী বা শিশুকে আবার কোনো ধরনের আঘাত করে বা করতে চায়, তা থেকে রক্ষার জন্য এই বিধান। তা ছাড়া অভিযুক্তকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্যও হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিতে পারে ট্রাইব্যুনাল। তবে কোনো নারী বা শিশুকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার আদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল ওই নারী বা শিশুর মতামত গ্রহণ ও বিবেচনা করবেন।

তদন্ত

অভিযুক্ত ব্যক্তি হাতেনাতে পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর ১৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তদন্ত শেষ করবে। আর অপরাধী ধরা না পড়লে তদন্তের নির্দেশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত সমাপ্ত না হলে তার কারণ ব্যাখ্যা করে সময় শেষ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ট্রাইব্যুনালকে জানাতে হবে। ট্রাইব্যুনাল ইচ্ছে করলে অন্য কর্মকর্তার ওপর তদন্তভার অর্পণের আদেশ দিতে পারেন। এই আদেশ দেওয়ার সাত দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে।

শাস্তি

বাংলাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ সংশোধিত ২০১৩ অনুযায়ী এসব অপরাধ প্রমাণিত হলে অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন থেকে মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে। এ ছাড়া রয়েছে অর্থদণ্ডের বিধান।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category

ক্যাটাগরি

© All rights reserved © 2022 AdalatNews

Developed By AdalatNews