করোনা বিধিনিষেধ ও টিকার বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টের বাইরে ট্রাক ও ক্যাম্পারভানসহ শত শত মানুষ রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ করেছেন। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা নিউজিল্যান্ডের বিভিন্ন স্থান থেকে এসে রাজধানী ওয়েলিংটনের সংসদ ভবনের বাইরে জড়ো হয়। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের বছরের প্রথম ভাষণের আগে এই বিক্ষোভকে মৌচাক হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের বেশিরভাগ মাস্কবিহীন ছিলেন। তাদের হাতের প্লাকার্ডে লেখা ছিল ‘স্বাধীনতার’ চাই এবং করোনা বিধিনিষেধ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত সংসদের বাইরে ক্যাম্প করার প্রতিশ্রুতি নেন তারা। এই বিক্ষোভ কয়েক দিন ধরে চলতে পারে।
মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করতে কঠোর সরকারি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কানাডার রাজধানী অটোয়ায় চলমান ট্রাকচালকদের অবরোধে অনুপ্রাণিত হয়ে নিউজিল্যান্ডেও আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরডার্ন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দেখা করেননি এবং পরে সাংবাদিকদের বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিনিধিত্ব করে না। আমি মনে করি, আমরা বাইরে যা দেখেছি তা সংখ্যাগরিষ্ঠের প্রতিনিধিত্ব হিসেবে চিহ্নিত করলে ভুল হবে। তিনি আরও বলেন, নিউজিল্যান্ডের বেশিরভাগ নাগরিক একে অপরকে নিরাপদ রাখতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন।
এর আগে, প্রথম সংসদীয় ভাষণে আরডার্ন সংসদ সদস্যদের বলেছিলেন, করোনা মহামারি ওমিক্রন ভ্যরিয়েন্টের মাধ্যমে শেষ হবে না এবং নিউজিল্যান্ডকে এ বছর ভাইরাসটির আরও ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলায় প্রস্তুত হতে হবে।
আরডার্নের সরকার করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত ২ বছর ধরে কঠোর কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। সরকারের এই নীতি সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার কমাতে সহায়তা করেছিল। ৫০ লাখ মানুষের দেশ নিউজিল্যান্ডে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৮ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
কিন্তু, কঠোর বিধিনিষেধের দেশটির অনেককে ক্ষুব্ধ করেছিল। কারণ, তাদের দীর্ঘদিন হোমআইসোলেশনে থাকতে হয়েছে। এছাড়া, নিউজিল্যান্ডের যেসব নাগরিক দেশের বাইরে থাকেন সীমান্ত বন্ধ থাকায় তারা দেশে ফিরে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। আন্তর্জাতিক পর্যটকদের ওপর নির্ভরশীল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত মাসে প্রকাশিত সর্বশেষ ওয়াননিউজ কান্টার জনমত জরিপে আরডার্নের রেটিং হ্রাস পেয়েছে। কারণ টিকা দিতে দেরি এবং বিধিনিষেধ তুলে না নেওয়া।