বিগত কয়েকমাস ধরে ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আদালত প্রাঙ্গন থেকে শ খানেক টাউট এর মুখোশ উন্মোচন এর খবর প্রকাশ হয়েছে। এই সমস্ত টাউটগুলো এতদিন নিম্ন আদালত দাপিয়ে বেড়ালেও দেশের সর্বোচ্চ আদালতেও এত টাউট থাকতে পারে তা অনেকেই ভাবতে পারেনি। সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গনে টাউট এর এই উপস্থিতিতে অনেকেই অবাক এবং হতাশ। আইনজীবীদের ধারনা কিছু অসাধু মহল তাদের নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য জন্ম দিয়েছে এই সমস্ত টাউটদের। আইনজীবীরা বলেন, এদেরকে সমূলে উচ্ছেদ করতে হলে যারা এদেরকে পালছে তাদেরকেও জনগনের সামনে এনে যথাযথ শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
সুপ্রীম কোর্ট চত্বরে আইনজীবীদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে সাদা শার্ট, কালো প্যান্ট এবং সাদা কলার ব্যান্ড। মূলত এই তিনটি পরিধেয় এর কারনে বাহ্যিক ভাবে কোন ব্যাক্তিকে প্রথম দেখাতেই আইনজীবী বলে ধরা যায়। সেই সাথে কালো গাউন তো আছেই। কিন্তু ইদানিং সুপ্রীম কোর্ট চত্বরে এই পোশাকের আংশিক ব্যবহার এবং পুরো ব্যবহার এর মাধ্যমে অনেককেই দেখা যায় সাদা শার্ট, এবং কালো প্যান্ট পরিহিত অবস্থায়। এখানেই থেকে যায় শুভংকরের ফাকিঁ। কেউ শুধু সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট পরেই কাটিয়ে দেন পুরো কার্যদিবস। এখানে দুই ধরনের অসুবিধা প্রথমত, কোন প্রকৃত আইনজীবী যদি সাদা শার্ট এবং কালো প্যান্ট পরে থাকেন তখন তাকে আর বোঝার উপায় থাকে না যে তিনি কি প্রকৃত আইনজীবী কি না। তাই এই পোশাক দিয়ে কে টাউট আর কে আইনজীবী তা বের করা বেশ কস্টসাধ্য হয়ে পরে। অন্যদিকে এখানে ভুল বশত কোন প্রকৃত আইনজীবীকে অপমান এর রিস্ক ও বেড়ে যায় বহুগুন। প্রকৃতপক্ষে অনেক আইনজীবীই এজলাশে কাজ না থাকলে একটু রিল্যাক্স হওয়ার জন্য শুধু সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট পরে থাকেন। যা আসলে যৌক্তিক কেননা সারাক্ষন গলায় সাদা ব্যান্ড আর গাউন পড়ে থাকাও কিছুটা অস্বস্তিকর।
তাই আদালত প্রাঙ্গনে যাতে কোন টাউট আইনজীবী বেশ ধারন করে কোন গ্রাহকের সাথে প্রতারনা করতে না পারে সেজন্য সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতি কতৃর্ক প্রদত্ত আইডি কার্ড পরিধান বাধ্যতামূলক করা উচিত। যদিও এই আইডি কার্ড পরিধান অনেক সিনিয়র আইনজীবীর জন্য হয়তো কিছুটা বিব্রতকর হতে পারে। কিন্তু যখন সবাই এই আইডি কার্ড পড়বে তখন এটা নিয়মে পরিনত হবে। এবং কারো কাছেই আর বিষয়টা খারাপ লাগবে না।