লালমনিরহাটের একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মহুবর রহমান নিজের নাম পরিবর্তন করেও বাঁচতে পারেননি। প্রায় ২৩ বছর পর পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন তিনি।
মহুবর রহমান আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের চরগোবর্ধন এলাকার মনসুর আলীর ছেলে। মহুবর রহমান নিজের নাম পরিবর্তন করে মাহবুব আলম নাম ধারণ করে দীর্ঘ ২২ বছর ৮ মাস ৫ দিন ঢাকা, গাজীপুর, কুমিল্লা, রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পালিয়ে বেড়িয়েছেন।
আদিতমারী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক জানান, ১৯৯৯ সালের ২৭ মে মহিষখোঁচা ইউনিয়নের চরগোবর্ধন এলাকার বছর উদ্দিনের একটি বাছুর গরু প্রতিবেশি মনসুর আলীর কাউন ক্ষেত খায়। পরে বাছুর গরুটি আটক করে মনসুর আলী ও তার ছেলে মহুবর রহমান খোয়াড়ে দিতে চান। তবে পথে বছর উদ্দিন ও তার ছেলে আফজাল হোসেন বাছুর গরুটি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে মনসুর উদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলে মহুবর রহমানকে হামলা করার আদেশ দেন। নির্দেশনা পেয়ে মহুবর তার হাতে থাকা ছোড়া দিয়ে আঘাত করলে আফজাল হোসেনের মৃত্যু ঘটে।
এ ঘটনায় বছর উদ্দিনের ভাই কাছু শেখ বাদী হয়ে মনসুর আলী ও মহুবর রহমানকে আসামি করে আদিতমারী থানায় ৩০২/১১৪ ধারায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ মনসুর আলীকে ওইদিনেই গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। একই বছরের ২ সেপ্টেম্বর পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০০৩ সালের ২৯ মার্চ বিজ্ঞ আদালত মনসুর আলী ও তার ছেলে মহুবর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে এক হাজার টাকা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের সাজা দেন।
মনসুর আলী সাজা খেটে মুক্তি পেলেও মহুবর রহমান নাম পরিবর্তন করে পালিয়ে ছিলেন। অবশেষে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
আদিতমারী থানার ওসি মো. মোক্তারুল ইসলাম বলেন, বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকার মাহিগঞ্জ আলুটারী নামক এলাকা থেকে মহুবর রহমানকে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গ্রেফতার করে আদিতমারী থানায় নিয়ে আসে। পরে বুধবার বিকালে তাকে সাজা পরোয়ানা মতে লালমনিরহাট কারাগারে পাঠানো হয়েছে।